amp

ICT in BD

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ

                                                                                                                       
                                                                                                                            - এস আই খান (শফিক)

আওয়ামিলীগ সরকার ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের নিমিত্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নিরলসভাবে কার্যক্রম নি:সন্দেহে প্রসংশার দাবীদার। বাংলাদেশে অতি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশের প্রান্তিক তথা তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের হাতের মুঠোয় আইসিটি-কে তুলে দেয়ার পেছনে আইসিটি ডিভিশন সমগ্র পৃথিবীতে একটি রোল মডেল স্থাপন করেছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে আইটি/আইটিইএস খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ই-গভর্নমেন্ট, কানেক্টিভিটি, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

আইসিটি খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে আইসিটি বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

ই-গভর্নেন্স: 

ই-গভর্নেন্স কার্যক্রম বাস্তবায়নে Interoperability সমস্যা দূরীকরণ ও প্রক্রিয়া সহজসাধ্য করার জন্য আইসিটি অবকাঠামো একত্রীকরণ; বিদ্যমান আইসিটি পরিকাঠামোর জটিলতা দূরীকরণে; আউট সোর্স আইটি সলিউশন প্রদান করতে; একইভাবে নতুন বিনিয়োগের সামগ্রিক ঝুঁকি এবং আইটি মালিকানা খরচ কমাতে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক Bangladesh National Enterprise Architecture (NEA) উন্নয়ন করা হচ্ছে। 

সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও সংস্থার জন্য আইসিটি রোডম্যাপকরণ ও সকল কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে; “ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন” শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/অধিদপ্তরের সকল রিসোর্স যেমন- অর্থ-সম্পদ (বাজেট ও হিসাব), মানব সম্পদ, প্রকল্প, ট্রান্সপোর্ট ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ERP (Enterprise Resource Planning) Solution বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অফিসে ব্যবহার করার জন্য একটি ERP Solution তৈরী করার লক্ষ্যে “ই-গভর্নমেন্ট ইআরপি” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 

সরাসরি কল করে আইসিটির মাধ্যমে জীবনযাত্রা সহজীকরণে স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রা সহজ সরকারি সেবা এবং টিপস, লাইভ চ্যাট, এবং অন্যান্য বিভিন্ন সার্চ অপশন ব্যবহারে জরুরি তথ্য পেতে ও জরুরি অবস্থান ও পরিসেবা গ্রহণে 999: ইমারজেন্সি সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। 

ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এবং মোবাইল কোর্টের ডিজিটালাইজেশনের লক্ষ্যে আদালতের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রযুক্তি সামগ্রী সরবরাহ করা এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং কোর্টের কর্মচারীবৃন্দকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে ই-এক্সিকিউটিভ মোবাইল কোর্ট বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 

সরকারি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে সরকারি সেবার মান বাড়াতে ও গোপনীয়তা রক্ষা করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও ফাইল আদান-প্রদানে দেশীয় ম্যাসেজিং অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) ‘আলাপন’ চালু করা হয়েছে।

সরকার প্রতিশ্রুত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তি হিসেবে দেশে ই-কমার্স, ই-লেনদেন, ই-গভর্নেন্স চালুকরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ২০১৫ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণকল্পে দেশে ডিজিটাল স্বাক্ষর প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে সংযুক্ত অফিস হিসাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) মোতাবেক ২০১২ সালে ইলেক্ট্রনিক স্বাক্ষর সার্টিফিকেট প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রকের (Controller of Certifying Authorities) এর কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে Interoperability Guideline, Auditing Guideline, Certification Practice Statement (CPS) Guide line প্রস্তুত করা হয়েছে।

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক ইতোমধ্যে তাদের স্ব-স্ব ওয়েবসাইট ও দপ্তরে ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবহার শুরু করেছে। e-TIN এবং জন্ম নিবন্ধনে ডিজিটাল স্বাক্ষরের ব্যবহার শুরু করা হয়েছে।

অবকাঠামো উন্নয়ন:

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসহ ৬৪টি জেলা ও ৬৪টি সদর উপজেলা পর্যায়ের দপ্তরের মধ্যে নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে সমন্বিত তথ্য ব্যবস্থাপনা ও রিয়াল টাইম প্রশাসন প্রবর্তন ও ফলপ্রসু ই-গভর্ণমেন্ট বাস্তবায়নের জন্য দেশব্যাপী উপযুক্ত পাবলিক নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন স্থাপন করার লক্ষ্যে “ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভার্ণমেন্ট (বাংলাগভঃনেট)” শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। 

“ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভার্ণমেন্ট ২য় পর্যায় (ইনফোসরকার-২)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সারাদেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১৮১৩০টি সরকারি দপ্তরে কানেক্টিভিটি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় ৮০০টি অফিসে ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। 

২৬০০ টি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল কানেক্টিভিটি এবং ১০০০ পুলিশ অফিসে ফাইবার অপটিক্যাল কানেক্টিভিটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত “জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। 

এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলে ৭৭২টি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল কানেক্টিভিটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত “Establishment of ICT Network to Remote Areas (Connected Bangladesh)” শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

জাতীয় তথ্য সম্ভারকে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক করার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল-এ সরকারিভাবে স্থাপিত জাতীয় ডাটা সেন্টার (Tier-3) কে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার)-এরও বেশী সরকারি ওয়েবসাইট এবং ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) Webmail e-mail account hosting করা হয়েছে। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের e-VAT, e-Tax ইত্যাদি সিস্টেম, National Portal Framework (NPF) Hosting করা হয়েছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকার তথ্য ভান্ডার ই-সেবা সংক্রান্ত কার্যক্রম এই ডাটা সেন্টার হতে পরিচালিত হচ্ছে। 

এছাড়াও, ডাটা সেন্টার হতে National e-Service Hosting Service-সহ নানাবিধ সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর-এ Tier-4 National Data Centre- হতে National e-Service Hosting Service-সহ নানাবিধ সেবা প্রদান করা হবে। গাজিপুরের কালিয়াকৈর-এ Tier-4 National Data Centre ডাটা সেন্টার তৈরীর কাজ চলমান রয়েছে। 

যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে National Data Centre এর ডিজাস্টার রিকোভারী সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। 


মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান:

বিসিসি’র ট্রেনিং ইনস্টিটিউট বিকেআইআইসিটি ও ৬টি বিভাগীয় সদর কেন্দ্রের মাধ্যমে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এ পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে কাস্টমাইজড কোর্সে ৪৭১ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। 

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সক্ষমতা উন্নয়নে এ পর্যন্ত ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। আইসিটি প্রশিক্ষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রতিবছর চাকুরী মেলার আয়োজন করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২২৩ জনের চাকুরীর ব্যবস্থা হচ্ছে। দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বিকাশের জন্য Leveraging ICT for Growth, Employment and Governance” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক শিল্পের জন্য ৩০,০০০ জন দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। 

বর্তমানে স্বনামধন্য ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়/ কলেজে ১৫২ টি ব্যাচে ৪৪৬৬ জন শিক্ষার্থীর Foundation Skills শীর্ষক প্রশিক্ষণ এবং IT শীর্ষক প্রশিক্ষণ এবং ৪৮টি বিশ্ববিদ্যালয়/ কলেজে ১৫২টি ব্যাচে ৪৪৬৬ জনের Top-up IT শীর্ষক প্রশিক্ষণ এবং ৪১৩৭ জনের Foundation Skills শীর্ষক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হয়েছে। 

প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৩২টি আইটি কোম্পানির সাথে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্মাক্ষরিত হয়েছে এবং ৭৪৯ জন প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি প্রদান করা হয়েছে। 

অপরদিকে FTFL(Fast Track Future Leader) প্রোগ্রাম কার্যক্রমের আওতায় এ পর্যন্ত এ ব্যাচে ৩৯৪ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। তন্মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ২৬৩ জনকে চাকরি ও ৪৩ জনকে ইন্টার্নশীপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

 “সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৯০১টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৫টি ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। 

বিভিন্ন পর্যায়ের জনসাধারণকে বিশেষতঃ যুব সম্প্রদায়কে আইসিটি ব্যবহারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিটি ল্যাবকে কেন্দ্র করে শেখ রাসেল আইসিটি ক্লাব গঠন করা হয়েছে। 

তরুণ প্রজন্মের ভাষাগত সীমাবদ্ধতা দূরীকরণে ভাষা শিক্ষা ল্যাবগুলো কাজ করবে। বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আইসিটি ও বিদেশী ভাষা জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনবল এ ল্যাবের মাধ্যমে সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইটি/ আইটিইএস সেক্টরের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীর লক্ষ্যে “সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট অব কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্ক (এবং অন্যান্য হাই-টেক পার্ক) প্রকল্পের আওতায় Skill Enhancement Program, Mid-Level Program, C-Level Training Program, Capacity Building in Public Sector, IT Training for IT students from Infosys in Bangalore, Oracle & SAP বিষয়ে প্রায় ৬৩৪১ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ১৩০৫ জন এবং পুরুষ ৪৭৩৬ জন। 

এছাড়াও মানব সম্পদ উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উল্লিখিত প্রকল্পের আওতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের Software Testing & Quality Assurance Lab; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে Animation Lab ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে Robotic Lab স্থাপন করা হয়েছে। 

টেকসই উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম তৈরি, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উদ্যোগ উন্নয়ন. মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণ ও সংযোগকরণ, তরুণ উদ্ভাবকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, উত্তম ধারণাসমূহ চিহ্নিতকরণ, লালন ও উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি এবং উদ্ভাবনী সামগ্রীর বাণিজ্যিকীকরণের লক্ষ্যে “iDEA: Innovation Design and Entrepreneurship Academy” শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রতিরোধেরও প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও তদন্তের জন্য সাইবার ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের জন্য সিসিএ কার্যালয় কর্তৃক -Upgradation of PKI (Public Key Infrastructure) System and Capacity Building of CCA Office” শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। 

সাইবার আক্রমন ও অপরাধ মোকাবেলায় এলআইসিটি প্রকল্পের অধীনে BDG e-Gov CIRT বা ই-গভর্মেন্ট সিইআরটি (কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। BDG e-Gov CIRT সাইবার আক্রমণ মোকাবেলা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব সিআইআরটি গঠনে সহায়তা করছে। এ পর্যন্ত ৭০টি সরকারি অফিসের ওয়েব সাইটের ভালনেরাবিলিটি টেস্ট করা হয়েছে। 

সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫৫৬ জনকে সাইবার সিকিউরিটি ডিজিটাল ফরেনসিক, ইথিক্যাল হ্যাকার (সিইএইচ), ম্যালওয়্যার অ্যানালাইসিস, ম্যানেজিং ডিজিটাল, ফরেনসিক ল্যাব বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। 

এছাড়া, আইটি খাতে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দেশের সাতটি স্থানে যথাক্রমে সিলেট কোম্পানীগঞ্জ, চট্টগ্রাম বন্দর, নাটোর সিংড়া, কুমিল্লা সদর, নেত্রকোনা সদর, বরিশাল সদর, মাগুরা সদরে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে “শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার” শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। 


আইটি ইন্ডাস্ট্রি উন্নয়ন:

দেশে যে সকল সফটওয়্যার উন্নয়ন অথবা ক্রয় করা হয়ে থাকে তার গুণগত ও আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করার নিমিত্ত একটি আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়্যারের মান নিশ্চিতকরণ, সক্ষমতা ও সার্টিফিকেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠাকরণ শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। 

আইটি সেক্টর উন্নয়নে কোম্পানীসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট অব কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্ক (এবং অন্যান্য হাই-টেক পার্ক) প্রকল্প এর আওতায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানকে Company Certification এর জন্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের (২৪টি ISO-900 এবং ৩টি ISO-27001, ৯টি CMMI Level-3, ২টি CMMI Level-5) Company Certification কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। 

বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ‘Datasoft Systems Bangladesh Limited’ ও "Leads Corporation Limited" প্রতিষ্ঠান দুটি CMMI (Level-5) সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। এছাড়াও, ৮০টি কোম্পানীকে Vendor Certification এ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।


বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি

বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি দেশের প্রথম রাষ্ট্রায়াত্ত্ব হাই-টেক পার্ক যা গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় ৩৫৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। পার্কটিকে কার্যকর ভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারী অর্থায়নে মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।


শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক

যশোর জেলায় ১২.১৩ একর জমির উপর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ১৫ তলা বিশিষ্ট মাল্টি ট্যানেন্ট ভবনের ১-১১ তলা পর্যন্ত ফিনিশিং কাজ ১০০% শেষ হয়েছে। ১২ টি আইটি কোম্পানিকে স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। তার মধ্যে ৭ টি প্রতিষ্ঠানকে সরজমিনে দখল প্রদান করা হয়েছে।


সিলেট ইলেকট্রনিক সিটি

সিলেট বিভাগের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৬২.৮৩ একর জমিতে পিপিপি মডেলে “সিলেট ইলেকট্রনিক সিটি” স্থাপনের নিমিত্ত গত ২১/০১/২০১৬ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সিলেট ইলেকট্রনিক সিটির ডেভেলপার নিয়োগের লক্ষ্যে খসড়া চুক্তিটি লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে সিলেট ইলেকট্রনিক সিটির প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি গত ০৮-০৩-২০১৬ তারিখে অনুমোদিত হয়েছে। 


বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটি

রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার নবীনগর মৌজায় ৩১.৬৩ একর জমিতে “বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটি” নামে একটি আইটি পার্ক স্থাপনের নিমিত্ত গত ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখ একনেক সভায় একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়াও সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট অফ কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্ক প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প এলাকার মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে ভূমি উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, সুয়ারেজ লাইন, পানি সরবরাহ লাইন, সড়ক বাতি এবং একটি প্রশিক্ষণ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।


জনতা টাওয়ার

ঢাকার কারওয়ান বাজারস্থ ১২ তলা বিশিষ্ট জনতা টাওয়ারকে গত ১৮/১০/১৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা কর্তৃক ‘সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ হিসেবে উদ্বোধন করা হয়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে উক্ত ভবনের ৪র্থ তলায় একটি আইটি ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা কর্তৃক গত ২৭-০৭-২০১৬ তারিখে উদ্বোধন করা হয় এবং প্রতিযোগীতার মাধ্যমে নির্বাচিত ১০ টি Start-up কোম্পানির মধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। উক্ত পার্কের অন্যান্য ফ্লোরে ইতোমধ্যে আগ্রহী আইটি/আইটিইএস কোম্পানীসমূহের মধ্যে স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে এবং ১৬ টি কোম্পানী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।


নাটোর আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার

নাটোরে আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার নির্মাণের জন্য পুরাতন জেলখানাসহ ১.২৪ একর জমি নির্বাচন করা হয়েছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এ কর্মসূচিটি জানুয়ারি ২০১৬ থেকে জুন ২০১৮ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে ৪৮০ জনের ট্রেনিং করার সুযোগ সৃষ্টি হবে, ৫০ টি Start-up, ২৯ টি Plug & Play প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠবে।


Tier-4 মানের ডাটা সেন্টার স্থাপন

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা, ই-সেবা এবং সরকারের অভ্যন্তরীণ তথ্য প্রবাহে ইলেকট্রনিক পদ্ধতি প্রবর্তনের উপযোগী অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ডাটা সংরক্ষণের জন্য কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কে Tier-4 মানের ডাটা সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। 


কানেক্টিভিটি স্থাপন

উপজেলা পর্যায়ে আইসিটি অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে “জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (ইনফো সরকার ৩য় পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্প একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ২৬০০টি ইউনিয়নে কানেক্টিভিটি স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

Chikungunya -Fact sheet

অসমাপ্ত কবিতা

সফল হতে নিজেকে নিচের ৯টি প্রশ্ন করতে পারেন, প্রতিদিন